বিনা অপরাধে চাকরি হারালেন একুশে টেলিভিশনের শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
- দীর্ঘদিন যাবৎ যাদের অক্লান্ত মেধা আর পরিশ্রম এর
- Apr 5, 2016
- 2 min read

২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল উন্মুক্ত টেরিস্ট্রিয়াল টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে সম্প্রচার শুরু করলেও ২০০২ সালের ২৯ অগাস্ট চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে আদালতের রায়ের পর একুশে টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরপর ২০০৫ সালের ১৪ এপ্রিল পুনরায় সম্প্রচারের অনুমতি নিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ স্যাটেলাইট টেলিভিশন হিসেবে সম্প্রচারে আসে একুশে টিভি।
২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় দায়ের করা এক মামলায় ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন একুশে টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। সেই থেকে তিনি এখনো কারাগারে রয়েছেন। পরে ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধান আসামি করে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায়ও তাকে আসামি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তিতে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন একুশে টিভির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব অভিযোগ মাথায় নিয়ে আব্দুস সালাম জেলে থাকার সময় গত বছরের ৮ অক্টোবর এক নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে একুশে টেলিভিশন লিমিটেডের শেয়ার এবং ট্রেডমার্ক, সার্ভিস মার্ক, লোগোসহ এতদসংক্রান্ত সব কিছু কিনে নেয় এস আলম গ্রুপ। এরপর ২৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মণ্ডলীর এক সভায় পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আসে। বর্তমানে একুশে টিভির পরিচালনা পর্ষদে মোহাম্মদ সাইফুল আলম চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সামাদ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন।
বর্তমানে নতুন পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব গ্রহনের পর একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। এর আগে তিনি এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তিতে তিনি বৈশাখী টেলিভিশনের বার্তা প্রধান হিসেবে ছিলেন।
সম্প্রতি একুশে টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দিয়েছেন ফারহানা নিশো।
ফারহানা নিশো যোগদানের পর জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর এক নিউজে তিনি বলেন। এর আগে আমি চ্যানেল ওয়ান ও বৈশাখী টিভির করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছি। সেখানে অনুষ্ঠান বিপণনের দিকটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবার অনুষ্ঠানের দিকটি দেখব। একুশে টিভি শুরু থেকেই দর্শকদের মাঝে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। আমরা এবার একুশে টিভির অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করব। এই টিভি চ্যানেলকে জনপ্রিয় করতে যা যা প্রয়োজন, সবই করব। তবে এ কাজে সফল হওয়ার জন্য সবার সহযোগিতা লাগবে।
ফারহানা নিশো এর আগে যমুনা টিভিতে সংবাদ উপস্থাপক এবং গাজী টিভিতে ‘আজকের অনন্যা’ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। ২০০৩ সালে এনটিভিতে সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে শুরু করলেও ফারহানা নিশো গ্রামীণফোনের টেকনিক্যাল ডিভিশন ও ওয়ারিদ টেলিকমে প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কাজ করেন।
তাদের মত যোগ্য সফল মিডিয়া বেক্তিত্ব যোগদানের পরপরই শুরু হয় একুশে টেলিভিশনে চাকরি হারানোর পালা।
প্রায় প্রতিদিনই পালাক্রমে চাকরি হারাচ্ছেন ডজন খানেক কর্মকর্তা ও কর্মচারি ।
একটি বিষস্তসুত্রে জানা যায়, গত এক মাসে একুশে টিভিতে বিনা অপরাধে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় শতাধিক কর্মচারী যাদের চাকরি যাওয়ার মত কোন অপরাধই ছিল না। দীর্ঘদিন যাবৎ যাদের অক্লান্ত মেধা আর পরিশ্রম এর ফসল আজকের একুশে টেলিভিশন বিনা অপরাধে এভাবে চাকরিচুত হলেন তারা । তাহলে সততা আর পরিশ্রমের মুল্য কোথায় ? যোগ্য উত্তরসুরীরা কি পারতেন না, এহেন অমানবিক পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করতে । প্রধানমন্ত্রীর পরিবর্তন হতে পারে দেশ ও রাজনীতির স্বার্থে, তাই বলে সচিবদের তো পরিবর্তন হয়না। যোগ্যতার প্রশ্নে, একুশে টেলিভিশনে দীর্ঘদিন যাবৎ নিয়জিত কর্মচারি যারা বিনা অপরাধে চাকরি হারালেন তাদের বিকল্প কোথায় ? এ প্রশ্নের উত্তর শুধু সময়ের অপেক্ষা।