এক কাপ চা, দাম ৮,০০,০০০/=(আট লক্ষ) টাকা ! গুজোব নয় সত্যি।
শুনে ভিমড়ি খেয়ে চোখ কপালে ওঠার যোগাড়। চা মাত্র এককাপ। আর দাম কিনা আট লাখ টাকা!
লাখ লাখ টাকার এই চায়ের নাম 'ডা হং পাও (Da Hong Pao)', যা পাওয়া যাবে চীনে।
চীনের উয়িশান অঞ্চলের উয়ি পর্বতে জন্মে এই চা গাছ।
কী আছে এই চায়ে যার জন্য এত দাম ?
বিবিসি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে ডা হং পাও চায়ের চমৎকার মিষ্টি একটি ঘ্রাণ আছে এবং চা পাতা শুকনো অবস্থায় দেখতে অনেকটা আমের আচারের মতো। চীনে এ ধরনের চায়ের কেতাবি নাম হল ওলং টি। আসলে এর দুষ্প্রাপ্যতাই এত দামের কারণ। উয়ি পর্বতের গায়ে এর মাত্র ছয়টি গাছ রয়েছে।
এই চা এখন ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে সুলভ হলেও সেগুলো আসল ডা হং পাও নয়। এই চা সাধারণ জনগণ চেখে দেখার সুযোগ পায়ই না বলতে গেলে। কেবলমাত্র চীনের সম্মানিত অতিথিরাই ডা হাং পাওয়ের কাপে চুমুক দেয়ার সুযোগ পান।
উল্লেখযোগ্য তথ্য, ১৯৯৮ সালে বাণিজ্যিকভাবে এই গাছগুলো থেকে ২০ গ্রাম চা ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৩৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। বছর খানেক আগে শেষ আসল ডা হং পাও চা গাছ থেকে পাতা তোলা হয়েছিল।
চীনে এ ধরনের চায়ের একটা কেতাবি নাম আছে—ওলং টি। তবে স্বাদ-গন্ধ-বর্ণের জন্য নয়, ডা হং পাও চা এত দামি অন্য কারণে (এক গ্রাম ডা হং পাও চায়ের দাম প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার টাকা)। মূলত দুষ্প্রাপ্য বলেই দামের এমন বাহার। ডা হং পাও চায়ের ছয়টি গাছ আছে চীনের উয়ি পর্বতের গায়ে। একটা গল্প প্রচলিত আছে। চীনের মিং রাজবংশের (১৩৬৮-১৬৪৪) এক নৃপতির মা একবার ভীষণ অসুখে পড়লেন। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য কত কিছুই না করলেন তিনি। কিছুতেই কিছু হয় না। শেষমেশ কেউ একজন বুদ্ধি বাতলালো, ডা হং পাও চা পান করানোর ব্যাপারে। নৃপতি তা-ই করলেন। তাঁর মা সুস্থও হলেন। ব্যস, ‘কপাল’ খুলে গেল এই চায়ের। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ল এর জাদুকরি ক্ষমতার কথা। মিং নৃপতি ঘোষণা করলেন, এই চা গাছ সংরক্ষণ করতে হবে। লাল রঙের বিশেষ শামিয়ানাও পাঠালেন গাছগুলো ঢেকে রাখার জন্য। আজও একইভাবে গাছগুলো সংরক্ষিত আছে। ১৯৯৮ সালে এই গাছগুলো থেকে ২০ গ্রাম চা বিক্রি হয়েছিল ১৯ লাখ ৩০ হাজার ৩৫২ টাকায়। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এই চায়ের পেছনে বিস্তর টাকাপয়সা ঢেলেছে। ফলে এই চা এখন ইউরোপ-আমেরিকার বাজারে সুলভই বলা চলে। তবে সেগুলো মোটেও আসল ডা হং পাও নয়; দামে তো সস্তা হবেই। আসল ডা হং পাও চা গাছ থেকে চা–পাতা তোলা হয়েছিল বছর খানেক আগে। মজার ব্যাপার হলো, সাধারণ জনগণ এই চা চেখে দেখার সুযোগ পায় না বললেই চলে। আগেই বলা হয়েছে, ২০ গ্রাম চা–পাতা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। আর এখন ডা হাং পাওয়ের কাপে চুমুক দিয়ে ‘ফার্স্ট ক্লাস চা’ বলার সুযোগ পান কেবল চীনের সম্মানিত অতিথিরা!