হাদিসের আলোকে শবে বরাতের আমল।
পবিত্র শবে বরাতের রাতের আমল ব্যক্তিগত, সম্মিলিত নয়। ফরজ নামাজ অবশ্যই মসজিদে আদায় করতে হবে। এরপর যা কিছু নফল তা নিজ নিজ ঘরে একাকি পড়বে। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার কোনো প্রমাণ হাদিসে নেই। আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর কোনো প্রচলন ছিল না। (ইকতিজাউস সিরাতিল মুস্তাকিম : ২/৬৩১-৬৪১; মারাকিল ফালাহ ২১৯)
হাদিসের আলোকে ফিকাহ কিতাবে শবে বরাতের বরকতময় রাতে যেসব আমল আদায়ের বর্ণনা রয়েছে : ১৪ শাবান দিবাগত রাত জেগে নফল ইবাদাত-বন্দেগি, জিকির-আজগার ও কোরআন তেলাওয়াত। এ রাতে যেকোনো নফল নামাজ পড়া যায়। নামাজ পড়া যায় যেকোনো সূরা দিয়ে। এজন্য কোনো নির্দিষ্ট সূরা দিয়ে পড়া জরুরি নয়। যত রাকাত ইচ্ছা পড়া যাবে। নামাজ নিজ ঘরে আদায় করাই উত্তম। বাসা কিংবা বাড়িতে পড়ার পরিবেশ না থাকলে মসজিদে পড়তে পারেন।
এ রাতে বেশি বেশি দোয়া করা উচিৎ। কেননা, আল্লাহ তা’য়ালা সূর্যাস্তের পর সূর্যাদয় পর্যন্ত দুনিয়ার আসমানে এসে মানুষকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য, রোগ, শোক, রিজিক চাওয়ার জন্য, বিপদ আপদ থেকে মুক্তির জন্য তথা বিভিন্ন মাকসুদ পূর্ণ হওয়ার জন্য আহ্বান করতে থাকেন।
তদুপরি অন্য এক হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, এ রাতে মানুষের সারা বছরের হায়াত-মওত ও রিজিক-দৌলত লেখা হয়ে থাকে। অতএব এ রাতে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি করে দোয়া করা চাই।
হাদিস শরিফে আছে, এ রাতে নবী করীম (সা.) কবর স্থানে গিয়েছিলেন এবং মৃত মুসমানদের জন্য মাগফেরাতের (ক্ষমার) দোয়া করেছিলেন। তাই এ রাতে কবর জিয়ারতে যাওয়া উচিৎ।
নবী করীম (সা.) মৃত স্বজন ও উম্মতদের জন্য মাগফিরাত চেয়ে দোয়া করেছিলেন। এটা ইসালে সওয়াবের অন্তর্ভুক্ত। তাই এ রাতে মৃতদের জন্য দোয়া ছাড়া ও অন্যান্য পদ্ধতিতে ও ইসালে সওয়াব হাসিলের সুযোগ রয়েছে। যেমন কিছু দান-খয়রাত ও নফল ইবাদাত করা। মৃতদের উদ্দেশে করে দান করাটাও উত্তম। ১৪ শাবান দিবাগত রাতে সেহরি খেয়ে ১৫ শাবান নফল রোজা রাখা উত্তম।
শবে বরাতের রাতে (১৪ শাবান দিবাগত রাতে ) গোসল করে পবিত্র হয়ে ইবাদত করা মুস্তাহাব। (রুদ্দুল মুহতার ১ম খণ্ড, বেহেস্তী গওহার)
সুত্র : বাংলামেইল।