top of page

সাংবাদিকতার নীতি- নৈতিকতা এবং দায়িত্ববোধ হতাশাজনক জায়গাতেই নেমে যাচ্ছে!


জ.ই. মামুন

জিপিএ ফাইভ এবং আমাদের সাংবাদিকতাঃ

জিপিএ ফাইভ নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একটি রিপোর্ট নিয়ে ফেসবুকে বেশ হইচই দেখছি দু'দিন ধরে। রিপোর্টটি দেখে সাংবাদিক হিসেবে আমি কিছুটা বিব্রত। সাংবাদিকতার নীতি- নৈতিকতা এবং দায়িত্ববোধ নিয়ে আমার সীমিত সাধ্যের ভেতরে অনেক বছর ধরে অনেক কথা বলছি, বলেছি টেলিভিশনে বা বিভিন্ন ট্রেইনিং/ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে। কিন্তু ধিরে ধিরে সেই মান হতাশাজনক জায়গাতেই নেমে যাচ্ছে বলে আমি আবারও উদ্বিগ্ন বোধ করছি।

জিপিএ ফাইভ পাওয়া ছেলেমেয়েরা জিপিএর মানে জানে না, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে জানে না বা নেপালের রাজধানী কোথায় জানে না- এই বিষয়গুলো যেভাবে সংবাদে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সাংবাদিকতার কোন নীতিমালায় পড়ে, আমার জানা নেই।


জ.ই. মামুন

সাংবাদিকরা যদি পথে পথে মানুষকে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের পরীক্ষা নিয়ে বেড়ান,

সেটাকে সাংবাদিকতা বলা যাবে নাকি জনমত জরিপ বলা যাবে তাও আমি নিশ্চিত নই। কিন্তু সাধারণভাবে আমার মনে হয়েছে ওই রিপোর্টের মাধ্যমে বাচ্চাগুলোকে চরম অবমাননা করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত, আমাদের সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এমনকি শিক্ষকদেরও একটি বিরাট অংশ এসব প্রশ্নের শুদ্ধ উত্তর দিতে পারবেন না।

যে রিপোর্টার এই রিপোর্ট করেছেন, বা যে সম্পাদক এটি দেখেছেন- প্রচার করেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদেরও এসব প্রশ্ন করা হলে ক'জন সঠিক উত্তর দিতে পারেন তাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। সামগ্রিকভাবে আমাদের শিক্ষার মান নেমে যাচ্ছে- এটা মেনে নিয়েও বলা যায়, এভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে প্রশ্নোত্তর প্রকাশ করে দেশের সামগ্রিক শিক্ষার মান নির্ধারণ অসম্ভব। কোন মাপকাঠিতে এসব শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়েছে, তারা কোন ধরণের স্কুল থেকে পাশ করেছে, কোনো কিছুই পরিস্কার নয়। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, জিপিএ ফাইভ না পেয়েও বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ে এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে, তার অসংখ্য প্রমাণ আমাদের চারপাশে তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে দেখি।

একটা শিশু কি ধরণের জ্ঞান নিয়ে বেড়ে উঠছে তা যতখানি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে, তার চেয়ে অনেক বেশি নির্ভর করে তার পরিবার এবং পরিবেশ- প্রতিবেশের উপর। আমরা আমাদের সন্তানদের, ছোট ভাই বোনদের কি সেই পরিবেশে মানুষ করতে পারছি, যে পরিবেশ তাকে প্রকৃতই মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে ? যদি না পারি তাহলে সেই দায় কি করে কেবল এই ছোট ছোট ছেলে মেয়েগুলোর উপর চাপিয়ে দিচ্ছি ?

সাংবাদিক সহকর্মী বন্ধুদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা দয়া করে দায়িত্ববোধের সাংবাদিকতা করুন, সস্তা জনপ্রিয়তার সাংবাদিকতা আপনার নিজেরও কাজে আসবে না, দেশেরও না। আর যারা ফেসবুকে এটা শেয়ার করে আনন্দ পাচ্ছেন, তারা নিজেকে প্রশ্ন করুন, পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন করুন- আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শ্রেষ্ঠ কারা বা সেক্টর কমান্ডারদের নাম কে কে বলতে পারবেন ?

জ.ই. মামুন এর ফেইসবুক পাতা থেকে।

  • Twitter Social Icon
  • Facebook Social Icon
  • Google+ Social Icon
  • LinkedIn Social Icon
Follow
"SAREGAMA JUST IN"

  জনপ্রিয় সংবাদ সা রে গা মা

বাংলা গান সা রে গা মা

Print  / Press Ctrl+P
Saregama Bangla

Sa Re Ga Ma News Archive

Write Yours Comments. 

RSS Feed

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited Privacy. 

bottom of page