top of page

জাপানি প্রকৌশলীরা ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু করছেন (ভিডিও)


ঢাকার মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু করতে যাচ্ছেন জাপানি কর্মকর্তারা। প্রকল্পের কাজের জন্য জাপান থেকে চলতি সপ্তাহেই ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক আসছেন ঢাকায়। ঈদের ছুটিতে জাপানে যাওয়া কর্মকর্তারাও ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গুলশান হত্যাযজ্ঞের পর প্রকল্প এলাকা ও জাপানি প্রকৌশলীসহ অন্য কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় চারটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হচ্ছে অর্ধশতাধিক সশস্ত্র আনসার সদস্য। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, মেট্রো রেল প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ১ জুলাই রাতে গুলশানে পুলিশসহ ২২ জনকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে বিদেশি ছিলেন ১৭ জন। বিদেশিদের মধ্যে সাতজন ছিলেন জাপানি নাগরিক। হত্যাকাণ্ডের পর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও জাইকাপ্রধান বাংলাদেশের সঙ্গে থাকার দৃঢ় মনোভাব প্রকাশ করেন। মেট্রো রেল ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত জাপানি কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়। ঢাকায় মেট্রো রেলের তিনটি কার্যালয় ছাড়াও প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিদেশি কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দেশের প্রথম মেট্রো রেল নির্মাণ হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৬ জুন প্রকল্পের ভৌত কাজের উদ্বোধন করেন। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো রেলের ডিপো নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে উত্তরা তৃতীয় পর্বে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা দিচ্ছে প্রায় ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

জাপানি প্রকৌশলীরা ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু করছেন

গত ১ জুলাই গুলশান হত্যাকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে সাত জাপানি নাগরিকের ছয়জন ঢাকায় মেট্রো রেল নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শক ছিলেন। পরামর্শকদের প্রাণহানির পর কাজ শুরু হওয়া মেট্রো রেল প্রকল্পে প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করেছিলেন। তবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক গতকাল বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ থেমে নেই। ছুটিতে যাওয়া কর্মকর্তারাও অচিরেই কাজে যোগ দেবেন। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আমি গত চার দিনের ব্যবধানে জাইকার তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের মনোবল অটুট রয়েছে।’ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের ২৫ জন নাগরিক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আছেন। ২৫ জনের মধ্যে বেশির ভাগই জাপানের নাগরিক। তাদের অবস্থানস্থলে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়। মেট্রো রেল প্রকল্পের মূল কার্যালয় ছাড়াও কার্যালয় আছে উত্তরা ও গুলশানে। এসব বিদেশি মূল কার্যালয়ে যাতায়াত না করলেও সীমিতভাবে চলাচল করেছেন। মেট্রো রেল প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ থেমে নেই। বিদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। কাজে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’ মেট্রো রেলের ভৌতকাজ উদ্বোধনের কয়েক দিন পর ঈদের ছুটি শুরু হয়। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ২৫ বিদেশির ১০ জনই ছুটিতে নিজ নিজ দেশে চলে যান। উত্তরায় প্রকল্পের ডিপো উন্নয়নের কাজ পেয়েছে জাপানের টোকিও কন্সট্রাকশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উপঠিকাদারির কাজ পেয়েছে দেশীয় একাধিক প্রতিষ্ঠান। ঈদের ছুটির কারণে এই মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন কর্মকর্তা জাপানে চলে গিয়েছিলেন। গুলশান হত্যাকাণ্ডের পর নিজ দেশের সরকারি নির্দেশনা গত ১২ জুলাই পর্যন্ত সতর্ক হয়ে চলাচলের নির্দেশনার কার্যকারিতা শেষ হয়েছে। জাপান থেকে এসব কর্মকর্তা ঢাকায় প্রকল্পের কাজে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বিদেশিদের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড -ডিএমটিসিএল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল গত ১০ জুলাই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) ও পুলিশের গুলশান জোনের পুলিশ দপ্তরেও চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় প্রকল্প কর্মকর্তাদের আবাসন এলাকা গুলশানে নিরাপত্তা আরো বাড়ানো হয়।

জাপানি প্রকৌশলীরা ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু করছেন

উত্তরায় প্রকল্পের ডিপো নির্মাণের জন্য বিভিন্ন কাজ চলছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ডিপো এলাকায় অস্থায়ী কার্যালয় করা হয়েছে। এখানে আনসারও নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রকল্প এলাকার চারদিকে বেড়া দেওয়া হবে। তার মধ্যে প্রবেশপথ থাকবে একটি। নির্মাণ করা হবে চারটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। টাওয়ার থেকে আনসার সদস্যরা পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখবেন। ঈদের ছুটির জন্য মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন জাপানে গেলেও তাঁদের উপসহকারী দেশীয় ঠিকাদাররা কাজ করছেন। ছুটি শেষে বিদেশিরাও ফিরবেন।

জানা গেছে, দেশে ২৪০টি জাপানি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জাপানের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তোশিবা করপোরেশন গত বছরের জুনে ঢাকায় দপ্তর চালু করে। গুলশানের হামলার পর ১০ জুলাই পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাংলাদেশ সফর করতে নিষেধ করা হয়েছিল। মিতসুবিশি মোটরসসহ অন্য জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের কর্মীদের বাংলাদেশ ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছিল। তবে সতর্কতা অনুসরণের সময়সীমা তাদেরও শেষ হয়েছে। তিনটি রুটে মেট্রো রেল নির্মাণ ছাড়াও মেট্রো রেল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটিতে চড়ার জন্য র‌্যাপিড পাস প্রকল্প, দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণ এবং পূর্বাঞ্চল সেতু উন্নয়ন প্রকল্পে যুক্ত আছেন জাপানি পরামর্শক ও অন্য কর্মকর্তারা।

জাইকার সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৪৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে জাপান। কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে জাইকা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণেও অর্থায়ন করছে জাইকা।

  • Twitter Social Icon
  • Facebook Social Icon
  • Google+ Social Icon
  • LinkedIn Social Icon
Follow
"SAREGAMA JUST IN"

  জনপ্রিয় সংবাদ সা রে গা মা

বাংলা গান সা রে গা মা

Print  / Press Ctrl+P
Saregama Bangla

Sa Re Ga Ma News Archive

Write Yours Comments. 

RSS Feed

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited Privacy. 

bottom of page