মঙ্গল গ্রহে চাষাবাদ!
- MUSIC BANGLA
- Jul 17, 2016
- 2 min read
এ যেন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি সত্যি হতে চলেছে। মঙ্গল গ্রহে গিয়ে বসবাস করতে ও টিকে থাকতে যে খাবারদাবার প্রয়োজন, এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা মঙ্গলে নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা আরও আগেই সেখানে যেতে যেতে চাইছেন। সেখানে যাওয়ার লক্ষ্যেই পৃথিবীতে মঙ্গলের মাটির মতো মাটি তৈরি করে চাষাবাদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মঙ্গলসদৃশ মাটিতে জন্মানো সবজি খাওয়া নিরাপদ বলে দাবি করেছেন নেদারল্যান্ডসের গবেষকেরা।

গবেষকেরা বলছেন, মঙ্গল গ্রহের মাটিতে জন্মানো যেতে পারে টমেটো, মটরশুঁটি ও মুলার মতো শাকসবজি। সেখানকার মাটি যতই বিষাক্ত হোক না কেন, এসব সবজি তা থেকে বিষ আহরণ করে না বলে তা খাওয়ার জন্যও নিরাপদ। মঙ্গল গ্রহের মতো মাটি তৈরি করে তাতে বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করা হচ্ছে।
ওয়াগেনিজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা গ্রিনহাউস পদ্ধতি ব্যবহার করে মঙ্গল গ্রহের মতো পরিবেশ তৈরি করেন এবং এতে উৎপাদিত চার রকমের সবজি নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। চাঁদ, মঙ্গল ও পৃথিবীর মাটিতে জন্মানো মটরশুঁটি।

ছবি: ফুড ফর মার্স অ্যান্ড মুন ফেসবুক পেজ।
এ ধরনের মাটিতে ক্যাডমিয়াম, তামা ও সিসার মতো ভারী ধাতু থাকায় তা সবজিকে বিষাক্ত করে তুলতে পারে বলে এত দিন ধারণা করছিলেন গবেষকেরা। মোট ১০ ধরনের সবজির মধ্যে চার ধরনের সবজিতে কোনো বিষ পাননি। এর মধ্যে রয়েছে মুলা, মটর, রাই ও টমেটো। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম, তামা, লোহা, ম্যাংগানিজ, জিঙ্ক, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, ক্রোম, নিকেল কিংবা সিসার মতো উপাদান থাকলেও তা ক্ষতিকর হতে পারে—এমন স্তর পর্যন্ত পৌঁছায়নি। চাঁদ, মঙ্গল ও পৃথিবীর মাটিতে জন্মানো মুলা। চাঁদের মাটিতে ফলন কম।

ছবি: ফুড ফর মার্স অ্যান্ড মুন ফেসবুক পেজ।
গবেষক উইগার উয়েমলিংক বলেন, ‘চমৎকার এই ফলাফল দারুণ আশাব্যঞ্জক। আমরা চার ধরনের সবজি খেতে পারি। এগুলোর স্বাদ চেখে দেখতে আমি উৎসাহী।’ এই গবেষক বলেন, যত বেশি সম্ভব ফসল উৎপাদনের বিষয়টি পরীক্ষা চালানো দরকার। এতে মঙ্গলে বসবাসকারীরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার সুযোগ পাবে। এই সবজিগুলোর ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টিগুণও পরীক্ষা করে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। মঙ্গলসদৃশ মাটিতে জন্মানো টমেটো।

‘দ্য মার্শিয়ান’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে মঙ্গলে চাষাবাদের চিত্র। ছবি: টুইটার।
যাঁরা ‘দ্য মার্শিয়ান’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন, তাঁরা মঙ্গল গ্রহের চাষাবাদপ্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। গবেষকেরা আশা করছেন, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি বাস্তব হওয়ার বিষয়টি আর খুব বেশি দূরে নয়।