‘বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক’ শুরু হচ্ছে যুক্তরাজ্যে!
আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ক্যালেন্ডারে এবার স্থান করে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশী ডিজাইন। বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন আইকন বিবি রাসেল সহ তারকা ও উদীয়মান প্রতিশ্রুতিশীল ডিজাইনারদের অংশগ্রহণে আগামী পয়লা অক্টোবর শনিবার প্রথমবারের মতো লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক লন্ডন ২০১৬।
ব্রিটিশ বাংলাদেশ ফ্যাশন কাউন্সিলের (বিবিএফসি) উদ্যোগে আগামী ১ অক্টোবর লন্ডনের ক্যানরি ওয়ার্ফের ফাইভ স্টার উইন্টার গার্ডেনে এই ফ্যাশন সপ্তাহ শুরু হবে।
মঙ্গলবার পূর্ব লন্ডনের কবি নজরুল সেন্টারে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন ‘বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক লন্ডন’র নির্বাহী পরিচালক ফকরুল হক। তার সঙ্গে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদিম কাদির, নতুন প্রজন্মের ফ্যাশন ডিজাইনার নাদিয়া আলী ও আয়েশা খান এবং ফ্যাশন প্রিন্ট ডিজাইনার রুকিয়া উল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফ্যাশন সপ্তাহে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ১২ জন ডিজাইনার তাদের সর্বশেষ পণ্য উপস্থাপন করবেন, যাতে বাংলাদেশি ঐতিহ্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্যাশন জগতের হালের ধারা তুলে ধরা হবে। উপস্থাপন করা হবে বাংলাদেশি ফ্যাশনের আধুনিক ডিজাইন ও বিশ্বমানের ফেব্রিক ও টেক্সটাইল।
সংবাদ সম্মেলনে ফকরুল বলেন, “এক সময় ভারতীয় মহারাজাদের, সুলতানদের প্রাসাদ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ রাজপরিবারসহ অভিজাতদের কাছে সবচেয়ে সমাদৃত ছিল বাংলার (আজকের বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলা) বস্ত্র ও বুনন শিল্প। রাজকীয় সভাসদ থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক ক্যাটওয়াকে বাংলাদেশি ফ্যাশনের আধিপত্য ও প্রভাব অনস্বীকার্য।
“বাংলা ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যিক সমঝোতা শত শত বছর ধরে চলে এলেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প হিসেবে আজ বাংলাদেশের টেক্সটাইল অন্যতম এক পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় এখন আধুনিক এক্সক্লুসিভ বুটিকসহ ফ্যাশন শিল্পের বিপ্লব ঘটে চলেছে।”
ফকরুল হক বলেন, “আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ক্যালেন্ডারে প্রতিভাবান ও খ্যাতিমান বাংলাদেশি ফ্যাশন ডিজাইনারদের সৃষ্টিগুলোকে তুলে ধরার প্রথম বিশ্বমানের আয়োজন হচ্ছে এই বাংলাদেশি ফ্যাশন উইক। এটা শুধু মূলধারার ফ্যাশন শিল্পের সামনে আমাদের ডিজাইনার কিংবা মেকারদের সৃষ্টিশীলতাকে তুলে ধরার অনন্য সুযোগ নয়, ক্রিয়েটিভ বিজনেস ও মিডিয়া সেক্টরের নেতৃস্থানীয়দের সাথে নেটওয়ার্কিংয়েরও সুযোগ এনে দিবে এই আয়োজন।”
বাংলাদেশি ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেল এই আয়োজনে যোগ দেবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এক বার্তায় বিবি রাসেল বলেন, ‘ফ্যাশন শোতে মনোমুগ্ধকর সুর ও ছন্দের তালে মডেলদের পারফরম্যান্স এবং পোশাকে বাংলাদেশি ঢং ও জাদুকরি বুননের অভিজ্ঞতায় আপনি মুগ্ধ হবেন—এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
এই ফ্যাশন শোতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও হালের ফ্যাশনের পাশাপাশি থাকবে বিয়ের পোশাকের প্রদর্শনী। মেকআপ আর্টিস্ট, হেয়ারস্টাইলার এবং এক্সেসরি ডিজাইনারদের কাজও থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি ফ্যাশন শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার নাদিম কাদির। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ফ্যাশন ডিজাইনার রুকিয়া উল্লাহ, নাদিয়া আলী ও আয়েশা খানও ফ্যাশন নিয়ে কথা বলেন। তাঁরা বলেন, যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা মূলত পোশাকের নকশা করেন। যাতে বাংলাদেশি ঐতিহ্যের পাশাপাশি পশ্চিমা ধাঁচের ও হালের প্রচলনের ছাপ থাকে। এসব পোশাক বাংলাদেশিদের পাশাপাশি পশ্চিমা ক্রেতাদেরও আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে বলেও মনে করেন তাঁরা।
অক্টোবর ক্যানরি ওয়ার্ফের উইন্টার গার্ডেনে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ফ্যাশন উইক লন্ডনের শো এর টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিচের লিংকে ভিজিট করতে পারেন।