top of page

“অভিজ্ঞতার বাইরে চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা থেকে বিরত থেকেছি”-তারেক মাসুদ।

৫ মে ২০০৬। ঝাঁঝালো দুপুর। রাজধানী মণিপুরী পাড়ায়, ঠিকানা খুঁজে খুঁজে বাসা বের করা ফেলা। তারপর মুখোমুখি এক মাস্টার ফিল্মমেকারের। তারেক মাসুদ। বলে রাখা ভালো, ‘চলচ্চিত্রকার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর একজন তরুণ নিজেকে কিভাবে তৈরি করবে’– এমন জিজ্ঞাসা নির্দিষ্ট করেই তার কাছে যাওয়া; আর সাক্ষাৎকার গ্রহণ নয় ঠিক, বরং তোতাপাখির মতো যেন প্রশ্ন পড়ে যাওয়া ! তার প্রয়াণ-দিবসে, একদশক আগের সেই আলাপ, কিংবা বলা ভালো, তার চলচ্চিত্র-পাঠদানে মন দেওয়া যাক…

সাক্ষাৎকার গ্রহণ । রুদ্র আরিফ

রুদ্র আরিফ : একজন তরুণ কিভাবে নির্মাতা হয়ে উঠতে পারে? মানে, তার প্রস্তুতিপর্বে অগ্রজ হিসেবে আপনার পরামর্শ কী?

তারেক মাসুদ : এমন তরুণদের জন্য আমার প্রথম কথা হচ্ছে, কোনো অগ্রজের পরামর্শ না নেওয়া। অগ্রজরা যা বলেন তা করলে, নির্মাতা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতে পারে। কারণ অগ্রজরা সাধারণত বলে থাকেন, এই রকম হতে হবে, অনেক সাধনা করতে হবে, অনেক প্রস্তুতি নিতে হবে, অনেক পরিশ্রম করতে হবে, অনেক একাগ্র হতে হবে ইত্যাদি। এগুলো তো খুব জানা কথা যে, তরুণ নির্মাতাদের জন্য অগ্রজ নির্মাতারা কী করবেন। তার সঙ্গে এটাও সত্য যে, অগ্রজ নির্মাতাদের কাছ থেকে শেখা যায় একাধিক ভাবে– শুধু তাদের কাজ দেখে, তাদের কথা, পরামর্শ থেকে যেমন শেখা যায়; তেমনি তাদের ভুল থেকেও শেখা যায়। আমি মনে করি, অগ্রজদের যে ত্রুটি, কিংবা যে পদ্ধতিতে বা যে প্রক্রিয়ায় তারা কাজ করছেন– সেই প্রক্রিয়ার সীমাবদ্ধতা কোথায়; তারা কোথায় আটকে আছেন বা আটকে ছিলেন– তার থেকে একটু ব্রেকথ্রু কিভাবে করতে হবে, সেটা বের করতে হবে।

আমি যেহেতু কোনো আনুষ্ঠানিক, প্রাতিষ্ঠানিক অথবা শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ শিখিনি, দেখে এবং ঠেকে শিখেছি, ভুল করে শিখেছি, ফলে আমি মনে করি, এ বিষয়ে তিনিই হয়তো ভালো বলতে পারেন– যিনি একটা আদর্শ পরিবেশে কাজ করেননি, যে নির্মাতা প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করেছেন, ভুল করে কাজ শিখেছেন; তিনিই কিন্তু বলতে পারেন, ‘হ্যাঁ, এটা করো না, এটা আমি করে দেখেছি’ ইত্যাদি। সেই জায়গা থেকে আমি বলতে পারি, ‘কী করিতে হইবে না’।

কতকগুলো টিপস আমি বলব। তার মধ্যে একটি হচ্ছে এই যে, চলচ্চিত্র নির্মাণ বা নির্মাণ-বিনির্মাণের কথা বলছি আমরা সেখানে, যে মাধ্যমটা, যে কারিগরি এবং টেকনিক্যাল এই ব্যাপারটা সবচেয়ে আগে বুঝতে হবে এবং একজন নির্মাতাকে শুধু ‘নির্মাতা হবো’ বলে নির্মাতা হওয়ার চেষ্টা না করে একজন কারিগর হিসেবে নিজেকে দেখতে হবে। টেকনিকস্‌ আর মোস্ট ইম্পর্টেন্ট।

শুটিং তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর।

টেকনিশিয়ান লেভেলে ছবির যে বিভিন্ন কারিগরি দিক রয়েছে, সেটা কস্টিউম থেকে শুরু করে মেকআপ, ক্যামেরা, লাইট, আর্ট ডিরেকশন, এডিটর, সাউন্ড… সবগুলোই যে মোটামুটি জানে, তখনই কিন্তু সে নির্মাণাধীন নির্মাতা হতে পারে। এ কারণে ফিল্মস্কুলে কিন্তু প্রথম বছরে কখনোই পরিচালনা শেখানো হয় না। অনেকগুলো স্কুলে প্রথমে বিভিন্ন কারিগরি দিক শেখানো হয়; যেগুলো অনেকটা বলা যায় শরিয়ত বনাম মারফত। অর্থাৎ শরিয়ত মানে প্রথম কাজগুলো, ফরজ কাজগুলো। সেগুলো হচ্ছে সব মাধ্যমে কারিগরি প্রযুক্তিগত দিকটা জানা; মাধ্যমটাকে জানা। সেই মেধাটা, অভিজ্ঞতাটা, সংবেদনশীলতা, শৈল্পিক মতামত– সেটা কিন্তু সবই যে ঈশ্বর প্রদত্ত, তা নয়। অনেকটাই দক্ষতা-অভিজ্ঞতা; কিছুটা সময়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত হয়।

বিভিন্ন ধরনের মাধ্যমের নিজস্ব ভাষা আছে; তার একটা লয়, ছন্দ, গতি আছে। একটা বাক্য বিন্যাস যদি ধরি সাহিত্যে, তাহলে বাক্য বিন্যাস আছে, যতি আছে; এগুলো যেমন সাহিত্যের জন্য প্রাথমিক, তেমনি এগুলো আয়ত্ত হয়ে গেলে পরে নির্মাতা হিসেবে অনায়াসে নির্মাণের দিকে যাওয়া যায়।

আমরা শুরু করি আসলে আমরা নির্মাতা হবো বলে! আমি মনে করি, তরুণরা যাতে আমাদের মতো না হয়। আমাদের প্রজন্ম কিংবা আমাদের আগের প্রজন্ম, এরা লেন্থ-লেন্স না বুঝে, তাল না বুঝে, ইমারশন না বুঝে, অনেক কারিগরি দিক না বুঝে কাজ শুরু করেছে। তারা এই জিনিসগুলোকে জানার প্রয়োজন মনে করেনি। আমাদের প্রজন্মের অনেকেরই ধারণা, ওটা তো ক্যামেরাম্যান দেখবে, ওটা তো আর্ট ডিরেক্টরের কাজ…! আজকের যে টোটাল সিনেমা– তা করতে গেলে, ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গেলে, এমনকি ভালো বিনির্মাতা হতে গেলে নির্মাণের প্রতিটি দিক সম্পর্কে জানতে হবে। এটিই হচ্ছে গ্রাজুয়েট বা পর্যায়ক্রমিক শিক্ষা।


রুদ্র আরিফ : ফিল্মের উপর একাডেমিক পড়াশোনা কতটা জরুরি?


তারেক মাসুদ : আমার মনে হয়, এটি সবসময়ই সাহায্যকারী। একাডেমিভিত্তিক চলচ্চিত্রের ইতিহাস জানা– সেটা এক জিনিস; কিন্তু চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাত্ত্বিক জ্ঞানের মধ্য দিয়ে যতটা না জানা যায়, তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন চলচ্চিত্র দেখা; জানার ধরনকে তাচ্ছিল্য না করে ওপেন মাইন্ড নিয়ে সব ধরনের চলচ্চিত্র উপোভোগ করা। আমি বলছি না যে, অগ্রজদের কথা একদমই শোনা যাবে না। অগ্রজরা হয়ত বলবেন, তারকোভস্কির ছবি দেখতে হবে অথবা জ্ঞানী ছবি…। তারা একটা জায়গায় আবদ্ধ করে দেন তরুণ নির্মাতাদের। চলচ্চিত্রে আসলে যত বৈচিত্র, তত বৈভব। ইরানি সিনেমা দেখতে যত ভালোই হোক, ইরানি সিনেমাই যদি আমার একমাত্র উৎস হয় উত্তেজনার, তাহলে কিন্তু আমি ওই খপ্পরে পড়ে যাব, ছকের মধ্যে পড়ে যাব। তারকোভস্কি বা গোদার বা ত্রুফো– এ রকম যাদের নাম চলচ্চিত্রে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছে, তারা কিন্তু চলচ্চিত্রের সর্বভূক ছিলেন। তারা সব ধরনের চলচ্চিত্র দেখতেন। আমার পছন্দ হতে পারে ফরাসি নির্মাতা ব্রেঁস, কিংবা কোনো জাপানি নির্মাতা, কিংবা আমার পছন্দ হতে পারে কিয়ারোস্তামি; কিন্তু আমি যখন চলচ্চিত্র দেখছি, তখন কোনো প্রি-জাজমেন্ট থাকা উচিত নয়। চলচ্চিত্র একটা নৃতাত্ত্বিক নৈর্ব্যক্তিক গতায়াতিক ধারা

আমাদের প্রজন্মে আমরা আর্টের নামে আর্টিফিশিয়ালিটি তৈরি করেছি। বাণিজ্যিক ছবির যেমন এক ধরনের ছক রয়েছে, আর্টিস্টিক ছবিরও কিন্তু একটা ছক তৈরি করে ফেলেছি আমরা। আর্ট ছবি মানে এ রকম স্লোমোশন হবে, আস্তে আস্তে কথা বলবে, ক্যামেরা আস্তে আস্তে ঘুরবে– এটা নট নেসেসারি; এটা হচ্ছে আমাদের নিজেদের একটা ছোট্ট গণ্ডির ভেতরে আটকে ফেলা। আর্টের ছবির ছকে আটকে যাওয়া একই রকম বিপজ্জনক। আমি মনে করি, বাণিজ্যিক ছবি থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়।

‘মাটির ময়না’র সেটে, তারেক মাসুদ । ‘পরিচালনা মানে পরিচর্যা…’

ছবির তাত্ত্বিক দিক নিয়ে পড়াশোনার চেয়ে ছবি দেখাটা জরুরি। আমরা যারা চলচ্চিত্রের স্কুলে পড়িনি, আমাদের স্কুল ছিল ‘চলচ্চিত্র সংসদ’। এর মাধ্যমে ৩৫ মি. মি. অথবা ১৬ মি. মি. ওয়ার্ল্ড পুরনো এবং সমসাময়িক ক্ল্যাসিক ছবিগুলো দেখতে পেরেছি। আজকের তরুণরা কিন্তু সেটা পাচ্ছে না। তরুণ যারা নির্মাতা হতে যাচ্ছে, তাদের জন্য যতই না একটা স্কুল দরকার, তার চেয়ে একটা ভালো অবকাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ দরকার, যার মাধ্যমে আমাদের তরুণরা ৩৫ মিলিমিটারে দেশি-বিদেশি-ধ্রুপদী সিনেমা প্রোপার সাউন্ড, প্রোপার পিকচারে যেন দেখতে পারে।

চলচ্চিত্র মাধ্যমে নির্মাতা হওয়াই তো একমাত্র কাজ নয়। চলচ্চিত্র লেখক, চলচ্চিত্র সমালোচনা– এসবও সৃজনশীল কাজ। এগুলোর জন্যও বাংলাদেশে ফিল্ম-স্টাডিজ খুব দরকার। চলচ্চিত্র এমনি এমনি বেড়ে উঠবে না। চলচ্চিত্রের খোঁজ-খবরঅলা, চলচ্চিত্রের জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ, চলচ্চিত্র পাঠক, চলচ্চিত্র দেখা না চলচ্চিত্র রিডিং– এ রকম বিতর্কবাজ, একাডেমিক প্রজন্ম– সবই সমান্তরালভাবে গড়ে উঠতে হবে। অনেকেই চলচ্চিত্র নির্মাণে এসেছেন চলচ্চিত্রের তাত্ত্বিক চর্চা থেকে। ফরাসি যে নব তরঙ্গ [‘নিউ ওয়েভ’]– এরা কিন্তু চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখি করতেন; পরে তারা ঝাঁপ দিয়ে পড়েছেন নির্মাণে। সেটা হতেই পারে। একই সঙ্গে আমি মনে করি, বাংলাদেশে চলচ্চিত্র দেখা এবং সেটা দুধের সাধ ঘোলে নয়; বরং ৩৫ মিলিমিটারে ভালো ছবি দেখার সুযোগ প্রয়োজন।


স্কুলিংয়ের যদি প্রয়োজন হয়, তবে তরুণদের বলব বাইরে যেতে। এখানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে ফিল্ম কোর্স। এগুলো আসলে যারা করছেন, তারা একটা দোকান খুলে বসেছেন, সার্টিফিকেটের দোকান। এ দিয়ে তেমন শিক্ষা-দীক্ষা হচ্ছে বলে আমি মনে করি না। দুই হচ্ছে, যারা এটা নিচ্ছেন, তারা আসলে টেলিভিশনে চাকরি করার জন্য, নাটক করার জন্য, পাদানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। এগুলো কোনো কাজের কথা নয়। হয় প্রোপার ফিল্মস্কুল হবে এদেশে, নয়তো তরুণদের বাইরে থেকে চলচ্চিত্রের ওপর পড়ে আসতে হবে। যেমন ভারতে আছে। ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে অনেক কম্পিটিশন; কিন্তু ফরাসি বা জার্মান ভাষা শিখলে অনায়াসে সব দেশে গিয়ে ফিল্মের ওপর পড়ার সুযোগ রয়েছে। দে স্যুড বি স্মার্ট এবং বিদেশে গিয়ে, আসলে কারিগরি কিছু শিখে আসতে হবে।

পরিচালনা মানে পরিচর্যা; যারা অভিনয় করছে– তাদের নির্দেশনা দেওয়া নয়। একটা টোটাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং, টোটাল কন্ট্রোলিং হলো পরিচালনা। আমরা যারা নির্মাতা আছি, তারা অনেক সময়, কোর্স-টোর্স করাচ্ছি। আমি মনে করি, এটি ভুল প্রবণতা। কারণ, পেশাদার নির্মাতা যদি আমি হই, আমি কিন্তু নিয়মিত কোর্স পরিচালনার জন্য বা ফিল্ম-স্ক্রীন করার জন্য চলচ্চিত্রের শিক্ষাদান করতে গিয়ে যে ধরনের মনোযোগ, যে ধরনের হোমওয়ার্ক আমাকে করতে হবে, যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার– সে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া পেশাদার নির্মাতা হিসেবে সম্ভব নয়। কিন্তু অনেক সময় চলচ্চিত্রে শিক্ষাদানের নামে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ফিল্ম-স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টে বা কোনো কোর্সে, প্রাইভেট কোনো কোর্সে বা সরকারি কোনো কোর্সে– ওখানে গিয়ে একটা লেকচার দিয়ে আসি আমরা। আসলে গালগল্প করে আসি কিছুটা!

আদম সুরত থেকে রানওয়ে : অসমাপ্ত কাগজের ফুল

বক্তৃতা আর ক্লাস নেওয়া এক জিনিস নয়। এখানে আমি মনে করি, চলচ্চিত্রের শিক্ষা যারা দেবেন, তারা চলচ্চিত্রের শিক্ষাক। তাদের আলাদা প্রশিক্ষিত একটি মাধ্যম আছে। প্রতিবেশী দেশের, পশ্চিমবাংলার যারা চলচ্চিত্র সম্পর্কে শিক্ষাদান করছেন– তারা চলচ্চিত্র নির্মাতা না হলেও, আমি অনেক ভালো চলচ্চিত্র নির্মাতা হতে পারি; তার মানে এই নয় যে, আমি চলচ্চিত্রের শিক্ষক হতে পারব। আবার ব্যতিক্রম যে হবে না, তাও নয়; যেমন– মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক– এরা সবাই চলচ্চিত্রের শিক্ষক হয়েছিলেন। অনেকে মনে করে, আমরা চলচ্চিত্রের একজন ভালো নির্মাতা, এ জন্য একজন ভালো শিক্ষকও। এটা ভালো নির্মাতা হলেও সম্ভব নয়। আমার যদি সে যোগ্যতাও থাকে, নিয়মিত নির্মাতা হই, আমি যদি সক্রিয় নির্মাতা হই, আমার পক্ষে দুটোর প্রতি সুবিচার করা সম্ভব হবে না।


আমি মনে করি, বিরাট একটা সুবিধা রয়েছে টেলিভিশনে। অনেকে ছোট পর্দাকে ছোট করে দেখেন : এটা নাকি চটুল বা হালকা; চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণরা আসছে না, কারণ টেলিভিশন তরুণদের গ্রাস করেছে। আমি এটাকে নেতিবাচকভাবে দেখি না। আসলে অডিও-ভিজুয়ালে যে অভিজ্ঞতা, আমরা যা ১০ বছরে শিখেছি, আজকের তরুণরা কিন্তু ১০ দিনে শিখতে না পারলেও ১০ মাসে শিখতে পারছে। এটাকে আমি স্বাগত জানাই। এটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও একটি কার্যকর প্রক্রিয়া। টেলিভিশন নাটকে কাজ করা, এমনকি বিজ্ঞাপনের ছবি করা– এটাও আমি মনে করি, কেউ যদি বিজ্ঞাপনে আটকে না যায়, বিজ্ঞাপন নির্মাণের মধ্য দিয়ে একটা প্রস্তুতি গ্রহণ করা সম্ভব। সত্যজিৎ রায়ও বিজ্ঞাপনের ছবি করতেন, বিজ্ঞাপন ফার্মে কাজ করতেন, গ্রাফিক্স ডিজাইনিং করতেন। সুতরাং, এগুলোর কোনোকিছুই আমি ছোট করে দেখার মনে করি না। যে কোনো ধরনের প্রস্তুতি– সেটা যতই হবে, তত ভালো। আবার যারা শুধু টেলিভিশনেই নাটক করতে চান, তারা তা করতে পারেন। আমি বলছি না, টেলিভিশন হলো সিনেমার পাদানি; বরং টেলিভিশনের আলাদা ফরমেট রয়েছে।


আজকের ক্ষেত্রে একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা আর ভিডিও নির্মাতার মধ্যে সে রকম পার্থক্য নেই। আমি মনে করি, এটা টেষ্ট এবং ওয়ানডে ম্যাচের সঙ্গে তুলনীয়। ‘টেলিভিশন নাটক’ কথাটাতে আমার আপত্তি আছে। আমি বলব– ‘টেলিভিশন প্রোডাকশন’। ‘ফিল্ম প্রোডাকশন’ বনাম ‘টেলিভিশন প্রোডাকশন’। আমি মনে করি, টেলিভিশন প্রোডাকশনেও অনেক ভালো কাজ হচ্ছে, তরুণরা এগিয়ে আসছে, তারা নতুন প্রযুক্তি ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক অগ্রসর হচ্ছে; সচেতন হচ্ছে, অভিজ্ঞ হচ্ছে। এই অভিজ্ঞতাটা চলচ্চিত্র নির্মাণে কাজে লাগালে চলচ্চিত্রেরও দিন বদলে যেতে পারে।

রুদ্র আরিফ : চলচ্চিত্র সংসদের মাধ্যমে আমরা চলচ্চিত্র নির্মাতা পেয়েছি। আমাদের দেশে চলচ্চিত্র শিক্ষকের অভাব। এ রকম একটা শ্রেণী কেন এদেশে গড়ে উঠছে না?

তারেক মাসুদ : চলচ্চিত্র সংসদের একমাত্র কাজ বড় বড় চলচ্চিত্রের নির্মাতা তৈরি করা নয়; বড় বড় চলচ্চিত্র জ্ঞানসম্পন্ন লোক– যারা চলচ্চিত্র শেখাতে পারবে, তাদেরও বের হওয়ার কথা ছিল ওখান থেকে। এই যে কলকাতায় জেএম দাশগুপ্ত, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, পিএন দাশ শর্মা– সত্যজিৎ রায় ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা আছেন, অথবা মৈনাক বিশ্বাস– এরা যারা চলচ্চিত্র সংসদ থেকে এসেছেন, তারা কিন্তু সবাই নির্মাতা হননি। আমাদের হয়েছে কি, চলচ্চিত্র সংসদ থেকে আমরা নির্মাতা ছাড়া আর কিছুই হব না! চলচ্চিত্রের শিক্ষক হওয়া, চলচ্চিত্র জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হওয়া– এটা প্রেস্টিজিয়াস। জেএম দাশগুপ্ত চলচ্চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অপর্ণা সেনের বাবা। এই যে একটা কৌলিণ্য আছে, চলচ্চিত্র বোদ্ধা হিসেবে, চলচ্চিত্র লেখক হিসেবে তিনি অত্যন্ত পূজনীয় ব্যক্তি। কোনো চলচ্চিত্র বিষয়ে তার পরামর্শ, তার মন্তব্য নেওয়া উচিত টেলিভিশনে।

২০০২ । কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল । অ্যাওয়ার্ড হাতে ক্যাথরিন মাসুদ ও তারেক মাসুদ

আজকে টেলিভিশনে চলচ্চিত্র নির্মাণের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে নির্মাতাদের ডাকা হয়, আমাদের ডাকা হয়। আজকে আমাকে ৫০ বছরের বাংলা চলচ্চিত্রের সম্পর্কে কিছু বলতে বললে, আমি হয়তো নিজের কথাই বলব। কিন্তু এটা তো নৈব্যক্তিক হলো না। নির্মাতারা যদি চলচ্চিত্রের ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেন, সেটা কিন্তু একপেশে হতে বাধ্য। এখানে আমার নিজস্ব ঈর্ষা-দ্বেষ কাজ করবে; অগ্রজদের অস্বীকার করার চেষ্টা করব। চলচ্চিত্রের নির্মাতাদের চলচ্চিত্রের শিক্ষা দেওয়া বন্ধ করা উচিত। এটা আমার সবিনয় অনুরোধ। আমি চেষ্টা করি এ থেকে যতদূর সম্ভব নিজেকে মুক্ত রাখতে।

রুদ্র আরিফ : আপনি নিজে কীভাবে চলচ্চিত্রে এলেন?

তারেক মাসুদ : আমি আসলে সচেতনভাবে নির্মাতা হইনি। আমি যখন ছবি বানাচ্ছি, তখনও বুঝতে পারিনি নির্মাতা হচ্ছি। কারণ, আমি যে পরিবেশে বড় হয়েছি, সে পরিবেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ তো দূরের কথা, চলচ্চিত্র দেখাও প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। সেখানে কখনো ভাবিনি আমি নির্মাতা হব। অনেকের ইচ্ছা থাকে না– আমি ডাক্তার হব, ইঞ্জিনিয়ার হব? কিন্তু আমি সে ভাবনাটা ভাবতে পারিনি। এখনকার ছেলেমেয়েরা কিন্তু ভাবতে পারে, বড় হয়ে আমি চলচ্চিত্র নির্মাতা হব। আমার বন্ধু-বান্ধবের ছেলেমেয়েকে এ রকম বলতে শুনি। এটা আসলে এখন প্রেস্টিজিয়াস ব্যাপার।

রুদ্র আরিফ : ওই মুহূর্তে আমাদের দেশে তো একজন তারেক মাসুদ ছিল না…

তারেক মাসুদ : এখন কিন্তু আমরা যৎসামান্যই সাফল্য পেয়েছি, তা দেখে তরুণরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, তারা ভাবছে, ছবি বানিয়েও তো সেলিব্রেটি হওয়া যায়। আমাদের সময় কিন্তু এ ব্যাপারটা ছিল না। তখন সিনেমায় যাওয়া মানে ‘নামা’। সিনেমায় ‘ওঠা’ না তখন। মধ্যবিত্ত শিক্ষিত অংশের কাছে এটা আসলে প্রেস্টিজিয়াস ছিল না তখন। এটা একটা স্মার্ট এবং অর্থনৈতিকভাবে লোভনীয় এবং সামাজিকভাবে প্রশংসিত ব্যাপার এখন। এটি কিন্তু আমাদের সময় ছিল না; এবং আমরা যারা চলচ্চিত্রে এসেছি, মনে হয় আমরা পাগলামি করে এসেছি। আসলে আমাদের প্রজন্ম এবং আমাদের আগের প্রজন্ম অন্য জায়গায় কিছু করতে না পেরে এবং নাটকেও কিছু না করতে পেরে… পাড়ার নাটকেও ঠাঁই পাচ্ছি না– তখন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাতে এসেছি।


আমি সুলতান [শিল্পী এসএম সুলতান] ভাইয়ের ওপরে ছবি করতে চেয়েছি, আমি আর আমার বন্ধু মিশুক মুনীর। ওই ছবি করতে গিয়ে সুলতান ভাইয়ের সঙ্গে সাতটা বছর যে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ালাম এবং এর মধ্য দিয়ে শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণ নয়, জীবন সম্পর্কে শিক্ষা পেয়েছি। যেমন, গ্রাম বাংলাকে নতুন করে শিখেছি, দেশকে চিনেছি, পেইন্টিং মাধ্যমটাকে বুঝেছি। একজন শিল্পী, এত আলোকিত একজন মানুষের সংস্পর্শে এসে আলোকিত হয়েছি। এটাতেই বিরাট মাদকতা ছিল। ছবির বিষয়টা অনেকটা বাই-প্রোডাক্ট ছিল। ছবি নিয়ে বিশেষ ব্যস্ত ছিলাম না। তাহলে আমি সাত বছর লাগাতাম না। সাত মাসে ছবি শেষ করে, পরিচালক হিসেবে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করতাম। সেই ‘৮২ সালে ছবি শুরু করে শেষ করেছি ‘৮৯ সালে। তার পরের ৪-৫ বছর ছবির সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না। এরপর বিদেশে চলে গেলাম এবং ওখানে কাকতালীয়ভাবে প্রায় মুক্তিযুদ্ধের ওপর ২০ ঘণ্টার ফুটেজ পেয়ে গেলাম, লেভিনের তোলা। ওটা না পেলে হয়তো নির্মাতা হিসেবে নিজের জীবনকে অব্যাহত রাখতাম না।

আমি একটা বইয়ের দোকানে চাকরি করতাম। চলচ্চিত্র আবার আমাকে কাকতালীয়ভাবে পেয়ে বসল। তা থেকে মুক্তির গান করলাম। চার বছর দেখতে দেখতে চলে গেল। তারপর দেশে ফিরে এলাম, ‘৯৫ সালে; ছবিটি মুক্তি দেব বলে। তারপর তো দেখলাম ঝড়ো একটা পরিবেশ। ছবি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড়। একটা ছবিকে মানুষ যে এমন করে গ্রহণ করতে পারে, আমি ভাবতে পারিনি। সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৪টা শো করতাম। মাইলের মতো লম্বা লাইন দিয়ে লোকজন ছবি দেখছে। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমি লক্ষ্য করলাম, চলচ্চিত্র আমার শুধু নেশা নয়, পেশাও হয়ে গেছে। সুতরাং, দেখে-ঠেকে আর নির্মাণ করতে করতেই নির্মাতা হয়ে যাওয়া; অর্থাৎ, কচুগাছ কাটতে কাটতে ডাকাত হয়ে যাওয়া! আমি দেশে এবং বিদেশে চলচ্চিত্রের ওপর বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করেছি। এগুলো কোনো বৃহত্তর পরিকল্পনা থেকে করিনি।

মুক্তির গান

রুদ্র আরিফ : ফিচার ফিল্ম বা কাহিনীচিত্র বানানোর কথা ভাবলেন কখন?

তারেক মাসুদ : প্রথমে আমি প্রামাণ্যচিত্র বানিয়েছি। যখন নিউইয়র্কে, ক্যাথরিনকে আমার ছেলেবেলার কাহিনী– মাদ্রাসার কথা বললাম; সে বলল, এটি একটি অসাধারণ ছবি হতে পারে। আমি তো প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা, আমি শৈশব নিয়ে কীভাবে ছবি করব? ও বলল, আমরা কাহিনীচিত্র নির্মাণ করব। আমার মাথায় এলো, হ্যাঁ, করা যেতে পারে তো! খুব দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে কাজ শুরু করলাম। পেশাদার শিল্পীকে দিয়ে কীভাবে অভিনয় করাতে হয়– তা আমি জানি না। সেজন্য অপেশাদার শিল্পীদের বেশি নিলাম এবং পরে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলাম পেশাদার শিল্পীদের সঙ্গে। তারপর বুঝলাম, পেশাদার শিল্পীদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পাওয়া যায়। এভাবে আমি কিন্তু কাহিনীচিত্রের নির্মাতা হয়ে গেছি। তারপর আবিষ্কার করলাম, আমি নির্মাতা হয়ে গেছি।


রুদ্র আরিফ : যখন আপনি আবিষ্কার করলেন নির্মাতা হয়ে গেছেন, তখন নতুন কোন ভাবনা এলো?

তারেক মাসুদ : এখন ভাবি, নির্মাতা হয়ে যাওয়ার পেছনে কতগুলো দায়িত্ব পড়ে যায়। আমি যে ধরনের ছবি নির্মাণ করে মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছি, সে ধরনের জায়গায় আটকে না থাকা, দর্শককে অন্য চমক দেওয়া, অন্য ধাক্কা দেওয়া যে, আমি অ্যানিমেশন করেছি, ডকুমেন্টারি করেছি, শর্টফিল্ম করেছি আবার ফুল লেন্থ ফিচার ফিল্মও করেছি। আমার ইচ্ছা হচ্ছে, আমি যেন একই জায়গায় আটকে না থাকি। প্রতিনিয়ত নিজেকে রিনিউ করতে চাই। আমার মনে হয়, কোনো প্রতিষ্ঠিত নির্মাতার জন্য এটা সবচেয়ে বড় জিনিস– আমি যেন প্রতিষ্ঠার কাছে আটকে না থাকি।

আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে দেখবেন, অনেক নতুন নির্মাতা বেরিয়েছেন। কিন্তু তারা তাদের এক ধরনের একঘেয়েমিতে আটকে গেছেন। তারা প্রথমদিকে নতুন মৌলিক একটা মাত্রা নিয়ে ছবি শুরু করেছিলেন। কিন্তু তারা ওই একই জায়গায় আটকে গিয়েছেন। এই ছক ভেঙে বেরিয়ে আসাটা একজন প্রতিষ্ঠিত নির্মাতার জন্যসবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের মানুষের, সমাজের যে জায়গাটায় আলো পড়েনি, সে জায়গায় আমি আলো ফেলতে চেষ্টা করি। এবং সব সময় নিজের অভিজ্ঞতার বাইরে চলচ্চিত্র নির্মাণের চেষ্টা থেকে বিরত থেকেছি।


তরুণদের প্রতি আমার একটা পরামর্শ থাকবে– চিত্রনাট্য ধার না করে বা নিজে না তৈরি করে নিজের জীবনের দিকে তাকান, নিজের চারপাশ, নিজের শৈশবের দিকে তাকান। নিজের কাছেই অসংখ্য মণি-রত্ন পড়ে আছে। এতে একটা মৌলিক কিছু হতে বাধ্য; এবং সেই মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে মৌলিক প্রকাশও হয়ে যাবে। এতে একটা শৈল্পিক নতুন ধারা বা রীতি তৈরি হয়ে যাবে। যে চলচ্চিত্র বিদ্যাগত বিষয়টাকে উপজীব্য করে নির্মাণ করা হয়, সেটা আসলে জীবনের কাছাকাছি যায় না। সেটা আর্ট হয় না; আর্টিফিসিয়াল হয়ে যায়।


রুদ্র আরিফ : আমাদের ছবি তো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক দর্শক বা আগ্রহী বোদ্ধারা আমাদের ছবি সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে তেমন কোনো তথ্যই পেতে পারে না। কারণ, তেমন ওয়েবসাইট নেই। এ বিষয়টি ভেবেছেন?

তারেক মাসুদ : আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, এ রকম ছবি তো দুয়েকটির বেশি নয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পেলেও আমাদের দেশে যে মানসম্পন্ন ছবি হয়নি বা হচ্ছে না– তা তো নয়। এগুলো নিয়ে খুব বেশি জানারও সুযোগ নেই এবং আমরা নিজেরাও তেমন কোনো ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারিনি– যার মাধ্যমে বিদেশিরা এবং আমাদের তরুণরা আমাদের চলচ্চিত্রের ইতিহাস সম্পর্কে, নির্মাতাদের সম্পর্কে জানতে পারবে। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করার চেষ্টা করছি; সেখানে শুধু আমাদের নয়, আমাদের সতীর্থ নির্মাতা, তরুণ নির্মাতা এবং অগ্রজ নির্মাতাদের সম্পর্কেও কিছু থাকবে। এটা আমার মনে হয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আমি মনে করি, কোনো দেশের চলচ্চিত্র একক কোনো সাফল্যের মধ্যে এগিয়ে যেতে পারে না। এর জন্য ধারাবাহিক চলচ্চিত্র চর্চার প্রয়োজন। আর এর জন্য আমাদের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা সবাই যদি একটা জায়গায় এসে দাঁড়াতে পারি, তাহলে আমাদের চলচ্চিত্র এগিয়ে যাবে। আমরা যদি কনুই দিয়ে তরুণদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করি, তবে তরুণদেরও ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, আমরাও এগুতে পারব না! নতুনদেরকে আমাদের স্বাগতম জানাতে হবে। তারাই আসলে অগ্রবর্তী ভূমিকা নেবে।


রুদ্র আরিফ : তাহলে আমরা আশা করতে পারি আমরা একটা ওয়েবসাইট পাচ্ছি।

তারেক মাসুদ : আমি অনেকের সহযোগিতায় এটা চেষ্টা করছি। আমাদের দেশের সবার সম্পর্কে দেশি বা বিদেশি দর্শকরা জানতে পারবে।

রুদ্র আরিফ : মাটির ময়না ডট কম-এ…

তারেক মাসুদ : …. অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। এখন চলচ্চিত্রের স্কুলিংয়ের বিষয়টা বলা হয়। আসলে অনলাইনে কিন্তু অনেক কিছু শেখা যায় ইন্টারনেটের মধ্য দিয়ে। সবাই সবকিছু জানতে পারবে। কোন ছবি দেশে-বিদেশে ভালো করছে, সেটা কিন্তু জানা যাবে সহজেই। তাই অগ্রজদের পক্ষে মোড়লিপনা করে সবকিছু আটকে রাখা সম্ভব হবে না। এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সব বিষয়ে পড়া যাবে, জানা যাবে। ওপেন ইউনিভার্সিটির চেয়েও কার্যকর হচ্ছে ইন্টারনেট।

রুদ্র আরিফ

সম্পাদক : ফিল্মফ্রি । ফিল্মবুক [সম্পাদনা/অনুবাদ] : ফিল্মমেকারের ভাষা [৪ খণ্ড : ইরান, লাতিন, আফ্রিকা, কোরিয়া]; ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো : প্রেম ও দেহগ্রস্ত ফিল্মমেকার; তারকোভস্কির ডায়েরি; আন্তোনিওনির সিনে-জগত; সিনেঅলা [২ খণ্ড] । কাব্যগ্রন্থ : ওপেন এয়ার কনসার্টের কবিতা; র‍্যাম্পমডেলের বাথটাবে অন্ধ কচ্ছপ; হাড়ের গ্যারেজ


  • Twitter Social Icon
  • Facebook Social Icon
  • Google+ Social Icon
  • LinkedIn Social Icon
Follow
"SAREGAMA JUST IN"

  জনপ্রিয় সংবাদ সা রে গা মা

বাংলা গান সা রে গা মা

Print  / Press Ctrl+P
Saregama Bangla

Sa Re Ga Ma News Archive

Write Yours Comments. 

RSS Feed

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited Privacy. 

bottom of page