ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
বাংলাদেশে বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বুধবার ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে এই তথ্য জানানো হয়, যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চার দশকের এই ঐতিহ্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলল।
প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও মঙ্গল শোভাযাত্রার এই স্বীকৃতির কথা জানানো হয়। ইউনেস্কোর সদর দপ্তর ফ্রান্সের রাজধানী শহরটিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় বিশ্বের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আন্তঃদেশীয় কমিটির একাদশ বৈঠকে ‘রিপ্রেজেন্টেটিভ লিস্ট অফ ইনট্যানজিয়েবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউমিনিটি’র তালিকায় বাংলাদেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গত শতকের ৮০ এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয়।
তারপর থেকে প্রতিবছরই বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে উৎসাহিত হয়ে ঢাকার বাইরেও একই ধরনের শোভাযাত্রা বের হচ্ছে পহেলা বৈশাখে।
চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু উৎসবের অনুসঙ্গই নয়, এর মধ্য দিয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে মেলে ধরার পাশাপাশি সমাজে অবক্ষয় থেকে মুক্তি, পেছনের দিকে হাঁটা প্রতিরোধের আহ্বানও জানানো হয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি
বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ইউনেস্কোও মঙ্গল শোভাযাত্রার অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে।
ইউনেস্কো কমিটি বলেছে, এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলাদেশের মানুষের সাহস আর অশুভের বিরুদ্ধে গর্বিত লড়াই আর ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার প্রতীকী রূপ।
ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সবার অংশ গ্রহণকেও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয় ইউনেস্কো কমিটি।
দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউনেস্কোয় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শহীদুল ইসলাম আদ্দিস আবাবার বৈঠকে দেশের পক্ষে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন।
ইউনেস্কো বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল
দলে ছিলেন ইথিওপিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম, মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্তমান ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ফারহানা আহমেদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গল শোভাযাত্রা সাংস্কৃতি ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তি সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার ফসল। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ও ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতি বিশ্বের কাছে নতুনভাবে ধরা পড়বে।
সুত্র : বিডি নিউজ