top of page

বাঘের পর এবার স্লোগান জিরাফ বাঁচাও, ২০ বছরে অর্ধেক হয়েছে জিরাফের সংখ্যা

গত ১৫ বছরে বিশ্বে প্রায় ৪০ শতাংশ জিরাফ কমে গিয়েছে। ১৫ বছর আগে জিরাফ সুমারিতে দেখা গিয়েছিল আফ্রিকায় প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার জিরাফ রয়েছে। সেখানে ২০১৪ এসে দেখা গেল হু হু করে কমতে কমতে জিরাফের সংখ্যা এসে ঠেকেছে মাত্র ৮০ হাজারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এভাবে কমতে থাকলে জিরাফ প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু কেন কমছে জিরাফের সংখ্যা ?

স্তন্যপায়ী প্রানী জিরাফ ধীরে ধীরে বিলুপ্তির দিকে এগুচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন গত তিন দশকে জিরাফের সংখ্যা কমেছে ৩০ শতাংশ। এজন্য খাদ্যভ্যাস আবাস্থলের পরিবর্তন চোরা শিকারিদের হামলা ও যুদ্ধ-বিগ্রহকে দায়ী করছে আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা-আইইউসিএন। আইইউসিএন এর তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৫ সালে বিশ্বে জিরাফ ছিল এক লাখ ৫৫ হাজারের কাছাকাছি যা গতবছরে নেমে এসেছে এসেছে ৯৭ হাজারে। প্রাণি বিশেষজ্ঞরা বলছেন মনুষ্য সৃষ্ট নানা কারণে বিলুপ্তির পথে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা প্রাণি জিরাফ। কেনিয়ার জিরাফ সেন্টার পরিচালক অ্যালেক্স মোতুকো জানান, জনসংখ্যার ঊর্ধ্বগতির কারণে কৃষি খামারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং উন্নয়নের ধাক্কায় বনভূমি কমে যাওয়ায় আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গায় জিরাফের চারণক্ষেত্র কমছে। মহাদেশটির বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতিও জিরাফকে হুমকিতে ফেলছে। সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে জিরাফের অস্তিত্ব রক্ষা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন তারা। অ্যালেক্স মোতুকো আরো জানান, কী কারণে জিরাফের অস্তিত্ব হুমকিতে, সে বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। সচেতন মানুষ নিশ্চয়ই ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত থাকবেন। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই বিপন্ন প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে। আইইউসিএনের সবশেষ প্রকাশিত লাল তালিকায় ৮৫ হাজার প্রজাতি স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ২৪ হাজার প্রাণী রয়েছে অতিমাত্রায় বিলুপ্তি ঝুঁকিতে।


চোরাশিকারীদের কাছে বাঘ, রায়ানো, হাতির দাঁতের চেয়েও নাকি দামি হয়ে গিয়েছে জিরাফের মাংস। আসলে হাতি, বাঘ শিকারের চেয়ে অনেক সহজে জিরাফ মারা যায়। তার ওপর আবার জিরাফের মাংসের চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া। তাই জিরাফ নিধন যজ্ঞ চলছে বেশ জাঁকিয়ে। এদিকে, এই সমস্যার কথা অনেকেই অবগত ছিলেন না। পশ্চিম আফ্রিকাকে জিরাফ রাজধানী হিসাবে ডাকা হত। সেই পশ্চিম আফ্রিকায় মাত্র ৩০০টি জিরাফ আছে বলে জানানো হয়েছে।

আরবী শব্দ 'জারাফা' থেকে জিরাফ শব্দের উৎপত্তি। এর অর্থ হলো দ্রুত হাঁটা। ১৫৯০ সালের দিকে ইতালিতে এর নাম হয় জিরাফা। পরবর্তিতে ১৬০০ শতাব্দিতে ফ্রেঞ্চ শব্দ 'জিরাফে' কে কিছুটা পরিবর্তন করে ইংরেজিতে 'জিরাফ' রাখা হয়। পুরো পৃথিবীতেই এরা জিরাফ নামে পরিচিত। জিরাফের বৈজ্ঞানিক নাম হলো Giraffa camelopardalis. জিরাফ একটি স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী। প্রাচীন কালে রোমানরা বিশ্বাস করতো যে জিরাফ হলো চিতা ও উটের সংকর জাত। ত্বকের দাগ ও উচ্চতার জন্য এমন ধারণা হয়েছিলো তাদের। আফ্রিকার বন-জঙ্গল গুলো জিরাফের প্রধান বিচরণস্থল। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক জিরাফের ওজন প্রায় ১৬০০ কেজি। প্রানীদের মধ্যে সবচেয়ে লম্বা হলো জিরাফ। দাঁড়ানো অবস্থায় একটি জিরাফ লম্বায় প্রায় ১৯ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। জিরাফের দৃষ্টিশক্তি প্রখর বলে দূর থেকেই শত্রু ও খাদ্য দেখতে পায়। ও ঘাড় লম্বা হলেও অন্য প্রানীর মতই এদের ঘাড়েও একটি মাত্র কশেরুকা থাকে। জিরাফের কশেরুকা অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতোই সংখ্যায় ৭টি। শুধু পার্থক্য হলো যে তাদের কশেরুকাগুলো অস্বাভাবিক রকমের বড়। আর তাই জিরাফের গলা এতো লম্বা। জিরাফের মাথায় ছোট দুটি ভোতা শিং থাকে। শিং গুলো আবার চামড়া দিয়ে আবৃত থাকে। জিরাফের পা প্রায় ৬ ফুট লম্বা। জিরাফের চারটি পা বেশ দৃঢ় এবং লম্বাটে। পেছনের দুটি পায়ের চেয়ে সামনের দুটি পা বড়। তাই জিরাফের কাঁধ থেকে লেজের দিকটা ঢালু। জিরাফ পা গুটিয়ে বসতে বেশ সময় লাগে এবং একবার বসলে উঠে দাড়াতেও সময় লাগে। তাই পানি খাওয়ার সময় এরা পা দুটিকে সামনের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে নিচু হয়। জিরাফের প্রধান শত্রু হলো সিংহ। জিরাফ যখন বসে থাকে বা পানি খাওয়ার জন্য নিচু হয় তখনই সাধাণরত এরা সিংহের শিকারে পরিণত হয়। এছাড়াও চিতা বাঘ, হায়েনা ও বন্য কুকুর থেকেও জিরাফের সাবধান থাকতে হয়। তবে জিরাফের পা খুবই শক্তিশালী। আত্মরক্ষায় এটাই জিরাফের প্রধান অস্ত্র। তাই সিংহ জিরাফকে আক্রমণ করার সময় বেশ সতর্কতা অবলম্বন করে এবং পেছন থেকে আক্রমণ করে।

  • জিরাফ নিরীহ স্বভাবের প্রাণী।

  • এরা সাধাণরত গাছের পাতা খায়। একাশিয়া গাছের পাতা এদের প্রিয় খাবার।

  • জিরাফ পানি না খেয়ে দীর্ঘ দিন কাটিয়ে দিতে পারে।

  • এরা দলবদ্ধ ভাবে চলাফেরা করে

  • জিরাফ দাঁড়িয়ে ঘুমায়।

  • জিরাফের ঘ্রাণশক্তিও প্রখর।

  • লম্বা পায়ের কারণে জিরাফের বসতে ও পানি খেতে সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে জিরাফ সামনের দিকে পা ছড়িয়ে দিয়ে পানি খায়।

  • জিরাফের গলার আওয়াজ খুবই কম প্রায় ২০ হার্জেরও নিচে।

  • সুস্থ-সবল জিরাফ ঘণ্টায় প্রায় ৬০ কি.মি. গতিতে দৌড়াতে পারে।

  • গরু ও ছাগলের মত জিরাফও আগে খেয়ে পরে জাবর কাটে।

  • প্রতিদিন জিরাফের ৬০ থেকে ৬৫ কেজি খাবার প্রয়োজন।

  • মা জিরাফ দাঁড়িয়ে বাচ্চা প্রসব করে। জন্মের সময়ে জিরাফ প্রায় ৫-৬ ফুট ওপর থেকে মাটিতে পড়ে। এক ঘণ্টা পরই শাবকটি তার লম্বা নড়বড়ে পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। দাঁড়িয়ে গেলে এরপর তাঁরা মায়ের দুগ্ধ পান করে।

জিরাফের পুরো গায়ে ডোরা কাটা দাগ আছে। তবে একটি জিরাফের দাগের সাথে আরেকটি জিরাফের কোনো মিল নেই। বাংলাদেশের বনে জিরাফ পাওয়া যায় না। তবে জিরাফ দেখতে চাইলে চলে যেতে পারেন মিরপুর চিড়িয়াখানায়। মিরপুর চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৫টি জিরাফ আছে।ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে মিরপুর চিড়িয়াখানা যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। ছুটির দিয়ে পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে দেখে আসতে পারেন লম্বা গলার এই সুন্দর প্রানীটিকে।

  • Twitter Social Icon
  • Facebook Social Icon
  • Google+ Social Icon
  • LinkedIn Social Icon
Follow
"SAREGAMA JUST IN"

  জনপ্রিয় সংবাদ সা রে গা মা

বাংলা গান সা রে গা মা

Print  / Press Ctrl+P
Saregama Bangla

Sa Re Ga Ma News Archive

Write Yours Comments. 

RSS Feed

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited Privacy. 

bottom of page