বৈশাখী অনুষ্ঠানে গলা ছেড়ে গাইলেন প্রধানমন্ত্রী!
গণভবনে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে পেশাদার শিল্পীদের সঙ্গে গলা ছেড়ে গান গেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, তাতে কি হয়েছে? অাবেগ তো কোনো নিয়মের সীমানায় অাটকে রাখা যায় না। ছেলের জন্মদিনে নিজে রান্না করে খাইয়েছিলেন। গ্রামে বেড়াতে গিয়ে ভ্যান গাড়িতে চড়ে ছিলেন।
শত ব্যস্ততা অার নিরাপত্তার মধ্যেও মাঝে মাঝেই এমন তাক লাগানো ঘটনার জন্ম দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা সাধারণ মানুষকে অারো কাছে রাখার অনুপ্রেরণা জোগায়।
শুক্রবার তেমনই এক তাক লাগানো ঘটনার অবতারণা করেন প্রধানমন্ত্রী। গাইলেন বৈশাখের গান। একেবারেই প্রাণের উচ্ছ্বাসে বৈশাখী ঢংয়ে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও। আয়োজন করা হয় নাচ-গানের।
শিল্পীদের পরিবেশন করা গানের সময় তাদের সঙ্গে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কণ্ঠ মেলান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
অনুষ্ঠানের শুরু হয় বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানটি দিয়ে। পরিবেশন করেন প্রখ্যাত শিল্পী সুবির নন্দী, লাইলি ইসলাম, শামা রহমানসহ অন্য শিল্পীরা।
এ সময় শেখ হাসিনাকে গলা ছেড়ে তাদের সঙ্গে গান গাইতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতা ও উপস্থিত অনেককে গানটি গাইতে দেখা যায়।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকো বিরাজ, সত্যসুন্দরো’ গানটি গাওয়ার মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই গানটিতেও অন্যদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রাণ খুলে গেয়েছেন।
এরপর একে পরিবেশিত হয় ‘তুমি নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান...’, ‘আমার বাংলাদেশটা’, ‘কোন মিস্ত্রি নাও বানাইলো, কেমন দেখা যায়। ঝিলমিল ঝিলমিল করে রে ময়ূরপঙ্খী নাও।’ হাছন রাজার গান ‘নেশা লাগিলো রে বাঁকা দুই নয়নে নেশা লাগিলো রে’, লালনের গান ‘তিন পাগলের হলো মেলা,... পাগলের সঙ্গ নিবি পাগল হবি; বুঝবি শেষে, তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে’।
এসব গানের তালে প্রধানমন্ত্রী কখনো হাততালি দিয়ে তাল মিলিয়েছেন, কখনো গলা মিলিয়েছেন।
‘আমার মায়ের এলো চুল; আমার বাংলাদেশটা। আমার বোনের কানের দূল; আমার বাংলাদেশটা।... রসের পিঠা খেজুর, খেজুর গুড় আমার বাংলাদেশটা। রাখাল বাসির মিষ্টি সুর আমার বাংলাদেশটা।...’ জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী সুবির নন্দী যখন ‘আমার বাংলাদেশটা’ গানের এই লাইনগুলো গাইছিলেন প্রধানমন্ত্রী গানের কথাগুলোর সঙ্গে মাথা ঝুকিয়ে, হাততালি দিয়ে গুনগুন কণ্ঠে সুর মিলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গানের এক ফাঁকে ‘রঙে ভরা বৈশাখ আইলো রে...’ গান এবং দেশের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি তুলে ধরে পরিবেশন করা হয় মনোজ্ঞ দলীয় নৃত্য।
প্রখ্যাত শিল্পী সুবির নন্দী, লাইলী ইসলাম, শামা রহমান, দিনাত জাহান মুন্নি, শবনম শিউলি, ফকির মন্ডল, আইরিন গোমেজ গান পরিবেশন করেন।
সমবেত নৃত্য পরিচালনা করেন সামিনা হোসেন এমা।
গণভবনে অতিথি আপ্যায়নে ছিলো চিড়ার মোয়া, মুরকি, মুরালি, কদমা, ঝিলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি।
নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এবারের আয়োজনটা অন্যবারের চেয়ে পুরোপুরি ভিন্ন।
সৌজন্যে বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম।
Comments